খাদ্য সংরক্ষণ (একাদশ অধ্যায়)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য | - | NCTB BOOK
118
118

খাদ্য সংরক্ষণ বলতে বোঝায় খাদ্য যাতে পচে নষ্ট হয়ে না যায় সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করে খাদ্যের গুণগত মান অনুসারে খাদ্যকে বিভিন্নভাবে মজুদ রাখা।
বিভিন্ন মৌসুমে উৎপাদিত শাকসবজি, ফলমূল, শস্য যেমন- চাল, গম, ডাল, সরিষা ইত্যাদি চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত অংশ অবিকৃত অবস্থায় দীর্ঘ দিন খাওয়ার উপযোগী রাখার জন্য বিজ্ঞানসম্মত বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। অর্থাৎ শাকসবজি, ফলমূল, শস্যদানা ইত্যাদি খাওয়ার বা বিক্রির জন্য সঞ্চয় করে রাখা যায়। ভবিষ্যতের জন্য উদ্বৃত্ত খাদ্যসামগ্রীকে নষ্ট করা বা অপচয় করা থেকে রক্ষা করে রাখাই খাদ্য সংরক্ষণের অন্যতম উদ্দেশ্য।

Content added By

খাদ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা (পাঠ ১)

498
498

শস্য মানুষের প্রধান খাদ্য বলে অনেকদিন পর্যন্ত কেবল শস্যই সংরক্ষণ করা হতো। ফ্রিজ, হিমাগারের মতো প্রযুক্তি উন্নতির সাথে সাথে আজ ফলমূল, শাকসবজি, মাছ-মাংস ইত্যাদিও সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যেসব খাদ্য সংরক্ষণ করা যায় সেগুলো হলো-

  • শস্য ও শস্য জাতীয় খাদ্য।
  • সবজি, ফলমূল এবং সবজি ও ফলের তৈরি খাদ্য।
  • মাছ ও মাংস এবং মাছ ও মাংসের তৈরি খাদ্য।
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য।

খাদ্য সংরক্ষণের ধরন নির্ভর করে খাদ্যের পচনশীলতা প্রকৃতির উপর। তাই দ্রুত পচনশীল, প্রায় পচনশীল এবং অপচনশীল খাদ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।

এখন আমরা খাদ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা জেনে নেই-

  • সংরক্ষণের মাধ্যমে এক মৌসুমের ফসল অন্য মৌসুমের জন্য সংরক্ষণ করে খাদ্যের চাহিদা ও অভাব মিটানো যায়।
  • ঋতুকালীন সবজি ও ফল সংরক্ষণ করে অপচয় রোধ করার পাশাপাশি খাদ্য ঘাটতি মেটানো যায়।
  • সংরক্ষণের মাধ্যমে সারাবছর ধরে বিভিন্ন মৌসুমের শস্য, শাকসবজি, ফলমূল সহজলভ্য করা সম্ভব।
  • দেশের সব অঞ্চলে সব ধরনের খাদ্যশস্য, সবজি, ফলমূল উৎপন্ন হয় না। যথাযথ উপায়ে শস্য-ফলমূল, সবজি সংরক্ষণ করে সারা দেশে সরবরাহ করা সম্ভব।
  • খাদ্য সংরক্ষণ করা হলে খরা, মহামারি, বন্যা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদেরকে খাদ্যের অভাব, অপুষ্টি থেকে রক্ষা করা যায়।
  • এছাড়া যুদ্ধ কিংবা অন্য কোনো কারণে অস্থিতিশীলতার সময় সৃষ্ট খাদ্য ঘাটতি, দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় খাদ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম।
  • মাছ-মাংস, ফলমূল ইত্যাদি খাদ্য টিনে সংরক্ষণ করে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
কাজ ১- খাদ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো।
Content added By

পচনশীলতার ভিত্তিতে খাদ্যের শ্রেণিবিভাগ (পাঠ ২)

78
78

কৃষক রজব আলী জীবন ও জীবিকার তাগিদে সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের ফসল যেমন- ধান, ডাল, গম, আলু, সরিষা, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, জিরা, ধনে ইত্যাদি চাষ করেন। বিভিন্ন মৌসুমে আবাদ করেন টমেটো, আনারস, তরমুজ, বাঙ্গি ইত্যাদি বাহারি ফল। বছর জুড়েই মরিচ, শাকসবজি, ফলমূল ফলান। এছাড়া খামারে গরু ও হাঁস মুরগি পালন করেন, পুকুরে চাষ করেন মাছ। উৎপাদনকালীন এসব খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া গেলেও যথাযথ উপায়ে সংরক্ষণের অভাবে ও পচনশীলতার কারণে এক সময় আবার দুর্লভ হয়ে পড়ে। ফলে মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে পরিবারের ন্যূনতম চাহিদা ও মেটানো সম্ভব হয় না।

তাই পচনশীলতার ধরন যাচাই করে উপযুক্ত উপায়ে এসব খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণ করা দরকার। যাতে সারাবছর এই খাদ্যগুলো দিয়ে নিজেদের চাহিদা মেটানো যায়।

সংরক্ষণ যোগ্য সব খাদ্যবস্তুকে পচনশীলতার প্রকৃতি ও মাত্রা অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

ক) দ্রুত পচনশীল বা সহজে পচনশীল খাদ্য
খ) প্রায় পচনশীল খাদ্য
গ) অপচনশীল খাদ্য

ক) দ্রুত পচনশীল বা সহজে পচনশীল খাদ্য
কোনো কোনো খাদ্য অতিদ্রুত অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পচন ধরে নষ্ট হয়। এসব খাদ্যে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। সেজন্য যত্ন না নিলে খুব দ্রুত পচে যায়। যেমন- মাছ, মাংস, দুধ, টমেটো, শাক ইত্যাদি। দ্রুত পচনশীল খাদ্য ফুটিয়ে, রেফ্রিজারেটরে রেখে বা বরফে জমিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়।

খ) প্রায় পচনশীল খাদ্য-

কোনো কোনো খাদ্য স্বাভাবিক অবস্থায় রেখেও কয়েক দিন ধরে খাওয়া যায়। কিছু সবজি যেমন- চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, কচু, আলু ইত্যাদি, কিছু কিছু ফল যেমন-চালতা, পেয়ারা, বড়ই, জলপাই ইত্যাদি এবং ডিম, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ইত্যাদি। এগুলোতে দ্রুত পচনশীল খাদ্যের চেয়ে পানির পরিমাণ কিছু কম থাকে বলে ঘরের ঠান্ডা আবহাওয়া, তাপ ও আলো থেকে দূরে রেখে কয়েক দিন ব্যবহার করা যায় ।

গ) অপচনশীল খাদ্য
চাল, ডাল, গম, শুকনা মরিচ, হলুদ, জিরা, সরিষা ইত্যাদি খাদ্যগুলোতে পানির পরিমাণ নেই বললেই চলে সঠিকভাবে এই খাদ্যগুলোকে ঝেড়ে বেছে, রোদে শুকিয়ে উপযুক্ত উপায়ে সংরক্ষণ করা হলে অনেকদিন ধরে খাওয়া যায়।

অপচনশীল খাদ্য

কাজ ১- দ্রুত পচনশীল ও অপচনশীল খাদ্যের একটি তালিকা তৈরি করো।
Content added By

খাদ্য নষ্ট হওয়ার কারণ (পাঠ ৩)

569
569

কোনো খাদ্যই স্বাভাবিকভাবে অনেকদিন ধরে ঘরে রাখা যায় না। যেমন-ফল, সবজি নরম হয়ে যায়, খোসা কুঁচকে যায়, কালো দাগ পড়ে, চিতি পড়ে, দুর্গন্ধ বের হয় ইত্যাদি। মাছ, মাংস পচে নষ্ট হলে উপরিভাগ পিচ্ছিল হয়। পচা মাছের চোখ ঘোলা হয়ে বসে যায়, পেটের নাড়িভুঁড়ি গলে যায় ফলে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে পেট ভেতরে বসে যায়, আঁশ ঢিলা ও কানকা ফ্যাকাসে হয়। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ডিমও নষ্ট হয়। শুকনো খাদ্য, চাল, ডালে ছত্রাক জন্মায় এবং পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়। একইভাবে রান্না করা খাদ্যে গাঁজন হয়, বুদ্‌বুদ ওঠে, টক গন্ধের সৃষ্টি হয়। তাই ঘরে রাখতে হলে খাবারকে পচনের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আর সেজন্যই খাবার কেন নষ্ট হয় সে সম্বন্ধে পুরোপুরি জ্ঞান থাকা দরকার।

খাদ্য নষ্ট হওয়ার কারণগুলো নিম্নরূপ:

১) অণুজীব

আমাদের চারদিকে বাতাসে, মাটিতে ও পানিতে ব্যাকটেরিয়া, ঈষ্ট, মোল্ড বা ছত্রাক ইত্যাদি অসংখ্য জীবাণু ছড়িয়ে আছে। এগুলো খালি চোখে দেখা যায় না। অণুজীবের বেঁচে থাকা ও বংশ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন খাদ্য, পানি, তাপ ও অক্সিজেন। সুযোগ পেলেই এগুলো খাদ্যে প্রবেশ করে এবং অনুকূল পরিবেশে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। অণুজীব দ্বারা আক্রান্ত হয়ে খাদ্য দূষিত হয় এবং পচে গিয়ে খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে।

উল্লেখযোগ্য অণুজীবগুলো হচ্ছে-

ক) ব্যাকটেরিয়া- ব্যাকটেরিয়া এককোষী জীব। মাছ-মাংস, শাকসবজি, ফল ইত্যাদি খাদ্যে ব্যাকটেরিয়া জন্মায় এবং খাদ্য পচিয়ে ফেলে। আর্দ্রতায় ব্যাকটেরিয়া খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য উচ্চতাপ প্রয়োজন। শুষ্ক পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি লোপ পায়।

খ) ইষ্ট- ইষ্ট হচ্ছে এককোষ বিশিষ্ট অণুজীব যা পানি ও বাতাসের উপস্থিতিতে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে খাদ্যকে নষ্ট করে। ইষ্টের প্রভাবে শর্করা গেঁজো অ্যালকোহল ও কার্বন ডাই-অক্সাইড তৈরি হয়। ইষ্ট বাতাসের অভাবে বাঁচতে পারে না। উত্তাপ দিয়ে ইষ্ট মেরে ফেলা যায়।

গ) ছত্রাক- ছত্রাক একজাতীয় উদ্ভিদ। উত্তাপ, আর্দ্রতা এবং বাতাসের উপস্থিতিতে কমলা, আম টমেটো, পনির, পাউরুটি, টক জাতীয় খাবারের উপর ছত্রাক জন্মায়। খাবারের উপর ছত্রাক ধূসর সবুজ বর্ণের আস্তরণ তৈরি করে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে শস্য ও চীনাবাদামে এক ধরনের বিষাক্ত ছত্রাক জন্মায় যা খেলে দেহে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। পানি ও আর্দ্রতায় ছত্রাক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। শুষ্ক, ঠান্ডা ও আলোযুক্ত স্থানে ও উচ্চ তাপে ছত্রাক জন্মায় না। রোদের তাপে ছত্রাক ধ্বংস হয়।

২) এনজাইম- এনজাইম উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষের উপাদান। উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষে এনজাইম অনুঘটকের কাজ করে। এনজাইম ফল ও সবজি পাকাতে সাহায্য করে। এনজাইমের প্রভাবে ফল অতিরিক্ত পেকে নরম ও বোঁটাচ্যুত হয়। এভাবে থেতলানো ফল জীবাণুর আক্রমণে কালচে বর্ণ ধারণ করে। বিকৃত গন্ধ সৃষ্টি হয় এবং নষ্ট হয়ে যায়। তাপ যত কম থাকে এনজাইমের কাজ তত কম হয়। ৮০° সে.-এর অধিক তাপে খাদ্য বস্তুকে উত্তপ্ত করলে এনজাইম নষ্ট হয়ে যায়।

৩) রাসায়নিক বিক্রিয়া- ফল ও সবজির রাসায়নিক উপাদান 'এসিড' ও 'ট্যানিন' বাতাস ও পানির সংস্পর্শে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটায়। এর ফলে খাদ্যের বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদের পরিবর্তন হয় এবং খাদ্য নষ্ট হয়। রাসায়নিক বিক্রিয়া রোধ করতে হলে ০° সে. তাপমাত্রায় ফলমূল সংরক্ষণ করা ভালো। খাদ্য শুকিয়ে পানি সম্পূর্ণরূপে বের করলে রাসায়নিক বিক্রিয়া রোধ হয়। বোতলে বায়ুশূন্য পরিবেশ সৃষ্টি করে ফলমূল সংরক্ষণ করলে রাসায়নিক বিক্রিয়া কম ঘটে।

৪) সংরক্ষণের অনুপযুক্ত স্থান সংরক্ষণকৃত শুকনো খাদ্যদ্রব্য সঠিকভাবে যথাস্থানে রাখা না হলে ধুলা-ময়লা, ইঁদুর, পোকামাকড়ের আক্রমণে খাদ্যবস্তু আক্রান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে জীবাণু ও ছত্রাক জন্মায় এবং খাদ্য নষ্ট হয়ে যায়।

কাজ ১- খাদ্য নষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলো।
Content added By

গৃহে খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি (পাঠ ৪)

99
99

আমরা প্রকৃতি থেকে যে খাদ্যগুলো পাই সেগুলো সবই পচনশীল। পচন ক্রিয়ার ফলে মানুষের উৎপাদিত খাদ্যসমূহ অনেকাংশে নষ্ট হয়। এই নষ্ট হওয়াকে রোধ করার জন্য খাদ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানা দরকার। আমরা বিভিন্নভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করতে পারি।
কুল, বরই, আম শুকিয়ে রাখা, নোনা ইলিশ, বিভিন্ন মাছের ও মাংসের শুঁটকি ইত্যাদি আমাদের দেশে প্রচলিত অতি পুরাতন সংরক্ষণ পদ্ধতি। এসব সংরক্ষণ পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে মূলত খাদ্য থেকে পানি শুকিয়ে পচন রোধ করা হয়।

গৃহে খাদ্য সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে-

  • এক মৌসুমের খাদ্য অন্য মৌসুমে খাওয়ার জন্য।
  • উৎপাদিত বাড়তি খাদ্যের অপচয় রোধ করার জন্য।
  • খাদ্যে জীবাণু ও এনজাইমের ক্রিয়া বন্ধ করা।
  • খাদ্যের পুষ্টিমূল্য বজায় রেখে খাদ্যের চাহিদা মেটানো।

গৃহে খাদ্য সংরক্ষণের কয়েকটি সাধারণ পদ্ধতি
রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ- মাছ-মাংস ও টাটকা শাকসবজির পানি প্রাকৃতিক উপায়ে রোদে শুকিয়ে নিতে পারলে পচন রোধ করা যায়। অনেকদিন ভালো থাকে। আলু, গাজর, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি, কুল, বরই, আম, মাছ, মাংস সঠিক নিয়মে রোদে শুকিয়ে নিলে অনেক দিন খাওয়া যায়।

গুড় ও চিনিতে সংরক্ষণ- গুড়, চিনি খাদ্য সংরক্ষক দ্রব্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। গুড়ের সিরায় বরই, তেঁতুল, আম ইত্যাদি অনেকদিন রেখে খাওয়া যায়। চিনি দিয়ে চালকুমড়া, আম, বেল ইত্যাদির মোরব্বা বানিয়ে অনেকদিন খাওয়া যায়। স্বাদ-গন্ধ ঠিক রাখার জন্য মাঝে মাঝে রোদে দিতে হয়।

সিরকা ও তেলে সংরক্ষণ- সিরকার ও তেলে সবজি ও ফলমূল এবং মসলা সংরক্ষণ করা যায়। সিরকা বা ভিনেগার খাদ্যে জীবাণু বৃদ্ধি রোধ করে। যেমন- সবজি বা ফলের পিকেলস। হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনে ইত্যাদি মসলা দিয়ে তেলে ডোবানো আচার অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে।

গুড় ও চিনিতে সংরক্ষণ (জেলি, মিষ্টি আচার) সিরকা ও তেল সংরক্ষণ

লবণে সংরক্ষণ- লবণের দ্রবণ জীবাণু বৃদ্ধি রোধে বিশেষ উপযোগী।

লবণে সংরক্ষণ

খাদ্যে লবণ মাখলে জীবাণু কোষ থেকে পানি শুকিয়ে যায়। যেমন- ইলিশ মাছের কাটা টুকরা লবণ মাখিয়ে নোনা ইলিশ তৈরি হয়। কাঁচা আম, চালতা, আমলকী লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে অনেকদিন রাখা যায়।

বরফে সংরক্ষণ- তাজা, টাটকা শাকসবজি পরিষ্কার করে পানি ঝরিয়ে পলিথিনে মুড়ে ফ্রিজে রাখা হয় এবং যাতে ঘেমে না পচে সেজন্য পলিথিন ব্যাগে দুচারটি ফুটো করে দিতে হয়। তবে ফ্রিজের নিচের তাপমাত্রা ৪৫° ফা.-এর বেশি না হয়। ফ্রিজের যে চেম্বারে খাবার জমে বরফে পরিণত হয় তাকে ফ্রিজার বলে। এর তাপমাত্রা ১৮° সে. পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর যে চেম্বারে খাবার বরফে পরিণত হয় না কিন্তু ঠান্ডা থাকে তাকে রেফ্রিজারেটর বলে। এই রেফ্রিজাটরের তাপমাত্রা ২° থেকে ৬° সে. পর্যন্ত হয়। দ্রুত পচনশীল খাদ্য যেমন- মাছ-মাংস, দুধ প্রভৃতি ফ্রিজারে রেখে দীর্ঘদিন রেখে খাওয়া যায়।

কাজ ১- খাদ্য সংরক্ষণের তিনটি পদ্ধতি বর্ণনা করো।
Content added By

অনুশীলনী

69
69

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :

১. রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রা সাধারণত কত সে. পর্যন্ত হয়?

ক. ২° সে থেকে ৪° সে.
খ. ৪° সে. থেকে ৬০ সে.
গ. ৬০ সে. থেকে ৮০ সে.
ঘ. ২০ সে. থেকে ৬০ সে.

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং ২ ও ৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
খালেক মিয়া একজন ফল ব্যবসায়ী। তিনি বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আম এনে বিক্রি করেন। এবার রাজশাহী থেকে আনা আমগুলো প্যাকিং ভালো না হওয়ায় অধিকাংশ আমই বিক্রির অনুপযোগী হয়ে যায়।

২. উদ্দীপকের ফলগুলো বিক্রয়ের অনুপযোগী হওয়ার জন্য দায়ী
i. ব্যাকটেরিয়া
ii. ছত্রাক
iii. এনজাইম
নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii

৩. রাজশাহী থেকে আনা আমগুলো-

ক. অ্যালকোহল সৃষ্টির জন্য সহায়ক
গ. এসিডের বিক্রিয়ায় নষ্ট হয়ে যায়
খ. কালচে বর্ণ ধারণ করে
ঘ. পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়

সৃজনশীল প্রশ্ন :

১.

রমজান মাস এসে পড়ায় সুমাইয়া মাসিক ও সাপ্তাহিক বাজারের তালিকায় চিত্রের উল্লিখিত তিন প্রকার খাদ্যদ্রব্য রাখেন। বাজার থেকে ফিরে তিনি ২ নং চিত্রের খাদ্যগুচ্ছকে সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং ১ নং ও ৩ নং চিত্রের খাদ্যগুচ্ছকে পরে গুছিয়ে রাখবেন বলে ঘরের একপাশে রেখে দেন।

ক. কীরূপ পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি লোপ পায়?
খ. খাবারের উপর ছত্রাক ধূসর সবুজ বর্ণের আস্তরণ তৈরি করে- বুঝিয়ে লেখো।
গ. সুমাইয়ার ২ নং চিত্রের খাদ্যগুচ্ছের সংরক্ষণের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের ১ নং ও ৩ নং চিত্রের খাদ্যগুলোকে স্বাভাবিকভাবে অনেক দিন ধরে রাখা সম্ভব কি? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

Content added By
Promotion